হুমকির মূখে শিক্ষাখাত !
এইচএম মু’তাছিম সীমান্ত: বাজেট একটি দেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার। গত ৫ জুন ২০১৪ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষনা করা হয়েছে। বাজেট নিয়ে বাজেট বিশেষজ্ঞদের নানা কথা থাকলেও শিশুদের জন্য রয়েছে আশা এবং হতাশা উভয় দিকই। শিশুদের উন্ন্যনের জন্য ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।যেখানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ-ই শিশু সেখানে ৫০ কোটি টাকা যথেষ্ট কিনা তাই এখন প্রশ্ন! ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষাখাতে ।যার পরিমাণ ১১ হাজার ৯শ ৩০ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা।২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে যার পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ১ শ ৭৯ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। টাকার দিকে তাকালে-ই মনে হবে গত বছরের তুলনায় এই বছর শিক্ষাখাতে অর্থ বরাদ্দ কমেছে।অবাক করা ব্যাপার হল গত ৫ বছর ধরে-ই শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে কমছে। ২০০৯-২০১০অর্থ বছরেশিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। ২০১০-২০১১অর্থ বছরেশিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ২০১১-২৯১২অর্থ বছরেশিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ। ২০১২-২০১৩অর্থ বছরেশিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ। ২০১৩-২০১৪অর্থ বছরেশিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের১১ দশমিক ২৯ শতাংশ। তবে গত ৫ বছরে সামগ্রিকভাবে জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমেছে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, আর গত ৫ বছরে সামগ্রিকভাবে জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে জিডিপির অনুপাতে বরাদ্দ কমেছে০.১৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মানদন্ডে শিক্ষা খাতে একটি দেশের মোট জাতীয় আয়ের (জিডিপি) ৬ শতাংশ বা মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ আদর্শ হিসেবে ধরা হয়। ওই পরিমাণ বরাদ্দ দিতে ২০০০ সালে সেনেগালের রাজধানীতে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের সম্মতিতে স্বাক্ষর হয় “ডাকার ঘোষণা” ।স্বাক্ষরিত বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও ছিল।কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে দিন দিন বরাদ্দ কমছে।অথচ আফ্রিকাসহ পৃথিবীর অনেক দরিদ্র দেশ বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশী বরাদ্দ দিচ্ছে। শিক্ষা খাতে বাজেট কমার ফলে বাংলাদেশের শিশুদের অনেক ক্ষতি হবে।দিন দিন শিশু শিক্ষার্থী বাড়ছে আর অন্যদিকে বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে দিন দিন বরাদ্দ কমছে।যার ফলে নতুন করে প্রাইমারী ও মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা নতুন শিক্ষার্থী অনুপাতে বৃদ্ধি পাবেনা,জানুয়ারীর ১ তারিখ শিক্ষার্থী এখন যে নতুন বই পায় এই ধরনের একটি মহত উদ্বোগ পড়তে পারে হুমকির মুখে। প্রাইমারী ও মাধ্যমিকে শিশু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়বে। গ্রাম ও শহরের শিক্ষা ব্যাবস্থার যে বৈষম্য রয়েছে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। এক কথায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থার গুনগত মান অনেক হ্রাস পাবে। শিক্ষা খাতের মান বৃদ্ধির জন্য সরকার যদি এখনি কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ না নেয় ও জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ না বাড়ায়তাহলে অচিরেই হয়তো বাংলাদেশের শিক্ষা খাত চরম বিপর্যয় এর মুখে পড়বে।