এন.সি.টি.এফ নরসিংদী’র হাসপাতাল পরিদর্শন
শিমুল আহমেদ তরঙ্গ : গত ২৮মে ন্যাশনাল চিলড্রেনস টাস্ক ফোর্স ; এন.সি.টি.এফ নরসিংদী জেলা কমিটি তাদের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে নরসিংদী জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনের কাজ সম্পন্ন করে। নরসিংদী জেলা এন.সি.টি.এফ এর সভাপতি তাহুয়া লাভিব তুরা’র নেতৃত্বে জেলা কমিটির ১১জন সদস্য এই পরিদর্শনে অংশগ্রহণ করে । কমিটির সদস্যদের সাথে ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন এর সি ওয়াই ভি জনাব উম্মে হাবিবা বর্ষা, এন.সি.টি.এফ নরসিংদী জেলার ভলান্টিয়ার জনাব এ.কে.এম সেলিম এবং সাথী আক্তার ।
এদিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ পরিদর্শনের সময় সেখানে কর্তব্যরত ইমারজেন্সি ওফিসার জনাব শামিমা ইয়াসমিন এর সাথে কথা হলে তিনি জনান , হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই অনেক শিশুকে নিয়ে আসা হয়। যাদের প্রধান সমস্যা থাকে ডায়রিয়া । এছাড়া নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের হার ও বেড়ে চলেছে।
এইদিকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কক্ষের সামনে রোগিদের বিশাল বড় জটলা দেখা যায়। অভিযোগ উঠে যে এখানে প্রায় ৩ ঘন্টা যাবৎ অপেক্ষা করার পরও কর্তব্যরত ডাক্তার এর দেখা নেই , একজন ডাক্তার চিকিৎসা দিচ্ছেন তা ও টাকার বিনিময়ে সিরিয়াল ভঙ্গ করে। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সেখানে গেল প্রথমে দালাল পথরোধ করে। পরে এন.সি.টি.এফ এর সাংবাদিক পরিচয় পাবার পর ঢোকা গেলে সেখানে অবস্থানরত চিকিৎসক নিজের পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জনান এবং বলেন যে শিশু বিশেষজ্ঞ বাইরে গেছেন , এবং তিনিই চিকিৎসা দিচ্ছেন। সিরিয়াল ভঙ্গের ব্যাপারে অস্বিকার করে বলেন টিকেটের নম্বর অনুযায়ী রোগী ডাকা হচ্ছে ।
এদিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড পরিদর্শন করা হয়। সেখানে কিছু বেড খালি থাকা সত্বেও অনেক রোগিদের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। যেখানে শিশুরা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর মেঝেতে অবস্থান করছে। এ ব্যপারে কর্তব্যরত নার্স কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান যে এগুলো মেডিসিন বিভাগের বেড। স্থান স্বল্পতার কারনে শিশুদের জন্য আলাদা কোন ওয়ার্ড রাখা হয় নি। একই সাথে তাদেরকে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।অতি দ্রুত এ ব্যপারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়াউচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
শসা বিক্রি করে কেমনে ইজ্ঞিনিয়ার হমু….!!
মুসাব্বির হোসেন(কুষ্টিয়া): গরীব বা ধনী হোক সবারই স্বপ্ন আছে । স্বপ্ন কখনো জাতি ভেদে হয় না । আর সবারই স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে । যে বয়সে লেখা পড়ার কথা ঠিক সে বয়সে আমাদের দেশে অনেক শিশুই তার পরিবারের জন্য জিবীকা নির্বাহ করার জন্য বিভিন্ন শ্রমে নিয়োজিত হয় ।
শ্রম যে রকমই হোক তারা চাই দুবেলা খেয়ে বাঁচতে । এইতো এনসিটিএফ এর খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে আইসিটি এন্ড ডকুমেন্টেশন ট্রেনিং থেকে ফেরার পথে ট্রেনে এই ধরনের এক শিশুর সাথে কথা হয় । দূর থেকে শোনা যায় “খিরা লইবেন খিরা” । শিশুটির নাম নাজমুল (১০) । খুলানার দৌলতপুরে রেলিগেট এলাকায় থাকে ।
নাজমুলকে স্কুলে যাওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে বলে সে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে । তার কাছ থেকে খিরা বিক্রির কারণ জানতে চাইলে বলে স্কুলে যামু কি দিয়া । যাইতে অটো ভাড়া লাগে তাই এই ব্যাবসা করি । প্রতিদিন আমার এই খিরা বেইচা লাভ হয় ১৫০-২৫০ টাকার মত । এই লাভের টাকা দিয়ে শিশুটি করে জানতে চাইলে বলে লাভের টাকা দিয়া স্কুলে যাই আর “মা”রে বাকি টাকা দিই । আর ঐ টাকা দিয়ে মা ঈদে জামা কপড় কিন্না দেয় ।
বড় হয়ে নাজমুল কি হতে চায় নাজমুলের কাছে জানতে চাইলে “আমি ইজ্ঞিনিয়ার হমু । গাড়ি বানামু” কিন্তু শসা বিক্রি করে কি ইজ্ঞিনিয়ার হওয়া যায় ? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা হয় তোমাকে যদি কেউ লেখা পড়ার খরচ দেয় তাহলে কি তুমি পড়বে ? প্রতি উত্তরে শিশুটি বলে “কে দেবে আমার লেখা পড়ার খরচ” ।
আমাদের দেশে আমাদের সমাজে অনেক শিশুই আছে যারা লেখা পড়া করতে চায় দেখে অনেক বড় বড় স্বপ্ন কিন্তু আর্থিক অভাবেই ঐসব ইচ্ছা ঐসব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকেই যায় ।
খুলনায় এনসিটিএফের দুই দিন ব্যাপি আইসিটি ও ডকুমেন্টেশন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
ন্যাশনাল চিলড্রেন’স্ টাস্কফোর্সের (এনসিটিএফ) খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে ২দিন ব্যাপি আইসিটি ও ডকুমেন্টেশন প্রশিক্ষণ ২০-২১ মে ২০১৫ ইং সম্পন্ন হয়েছে।
ম্যাস্-লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি) এর আয়োজনে এবং সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহযোগিতায় ৬৪ জেলাতে এনসিটিএফের আইসিটি এন্ড ডকুমেন্টেশন বিষয়ক প্রশিক্ষণের খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে সম্পন্ন হয়েছে ।
খুলনার সিএসএস আভা সেন্টারে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার প্রতি জেলা থেকে ২ জন করে শিশু এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে।
উক্ত প্রশিক্ষণে শিশুদের আইসিটি এন্ড ডকুমেন্টেশনের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। আইসিটি প্রশিক্ষণে কম্পিউটার পরিচিতি ও ব্যবহার, ইন্টারনেট ও ব্যবহার, ইমেইল, সার্চ ইঞ্জিন, সোস্যাল মিডিয়া ও বাংলাদেশের ব্যাতিক্রমধর্মী শিশুতোষ ওয়েবপোর্টাল এনসিটিএফবিডিডটওআরজি এর ব্যবহারের উপর বাস্তব প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণের শেষদিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনের সম্পাদক এবং খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি এস.এম. সাহিদ হোসেন। শিশুদের উদ্দেশে বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তি নির্ভর। আর প্রযুক্তির বিশ্বে বাংলাদেশও যুক্ত হয়েছে। বর্তমান শিশুদের এই প্রযুক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। আর এনসিটিএফ এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। এনসিটিএফের সাথে সম্পর্কিত শিশুরা আরো অনেক শিশুর তুলনায় অনেক মেধাবী। তারা সামাজিক দায়বদ্ধতা নিরসনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের সফলতায় এনসিটিএফ অনেক বড় অংশীদার হওয়ার যোগ্যতা রাখে।
উক্ত প্রশিক্ষণ পরিচালনায় ছিলেন ম্যাস্-লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি) এর প্রকল্প কর্মকর্তা সাইফ মাহদী, আইসিটি প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন সবুজবার্তা ডট কমের সম্পাদক, আসাদজোন ডট কমের স্বত্বাধিকারী এবং এনসিটিএফের সিওয়াইভি মোঃ আসাদুজ্জামান এবং এনসিটিএফের সিওয়াইভি মিদুল ইসলাম মৃদুল।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খুলনা এনসিটিএফের ডিভি জাহিদুল ইসলাম সুমন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দিনা।
এনসিটিএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুখপত্র প্রকাশ এবং পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
ফুয়াদ হাসান: গত ২০ মে বুধবার বিকাল ৫.০০ ঘটিকায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এনসিটিএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে পুলিশ সুপার মো: মনিরুজ্জামান পিপিএম(বার) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলামের বিদায় উপলক্ষে বিদায় সংবর্ধনা, তিতাস শিশু বার্তা “মা দিবস সংখ্যা”-এর প্রকাশনা এবং চিত্রাংকন ও সংগীত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঐ একই দিন বিকাল ৩.০০ ঘটিকায় চিত্রাংকন ও সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। উক্ত প্রতিযোগিতায় জেলার প্রায় আড়াই শতাধিক শিশু অংশ গ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো: মনিরুজ্জামান পিপিএম(বার)। এনসিটিএফ সভাপতি সায়েম খন্দকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলাম, সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি ডা:বজলুর রহমান, লোকমান হোসেন এপিপি এবং চাইল্ড পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার সাইদা সানজিদা লোপা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো: মনিরুজ্জামান পিপিএম(বার) বদলি হয়ে এআইজি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়াটারে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলাম মৌলভীবাজার বদলি হয়ে যাওয়ার কারণে এই বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশু সাংবাদিক মাকসুদা চৌধরী পলির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে এনসিটিএফ শিশু পিয়া এবং চাইল্ড পার্লামেন্ট মেম্বার কানিজ খন্দকার চৈতি অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়। এনসিটিএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাদিয়া নওরীন সারা বিদায়ী পুলিশ সুপার মো: মনিরুজ্জামান পিপিএম(বার)-এর হাতে ও সাংগঠনিক সম্পাদক তাহমিদ শাহরিয়ার বিদায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলাম-এর হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেয়। অন্যদিকে ১০ই মে “আন্তর্জাতিক মা দিবস”-কে উপলক্ষ করে এনসিটিএফ তাদের তিতাস শিশু বার্তার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। অনুষ্ঠানে তিতাস শিশু বার্তার এবারের সম্পাদক এবং এনসিটিএফ ব্যাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হাসান সকল অতিথিদের হাতে এবারের সংখ্যাটি তুলে দিয়ে তিতাস শিশু বার্তা “মা দিবস সংখ্যা”-টির আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো: মনিরুজ্জামান পিপিএম(বার) মা দিবস-কে উপলক্ষ করে এনসিটিএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া তাদের মুখপত্রটি প্রকাশ করায় তাদেরকে সাধুবাদ জানান। অল্প বয়সে শিশুরা মায়েদের সম্মানার্থে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা অতুলনীয়। তিনি আশ্বাস দেন যে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় না থাকলেও তিনি সবসময় এনসিটিএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশুদের পাশে থাকবেন।
অনুষ্ঠানের শেষে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিরা চিত্রাংকন ও সংগীত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
নাটোর হাসপাতালের মডেল শিশু ওয়ার্ড
এনসিটিএফ নাটোর জেলা কমিটি গত ১৮ মে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল পরিদর্শণে যায়। হাসপাতালের মডেল শিশু ওয়ার্ড আগের তুলনায় অনেক পরির্বতন হয়েছে। নেই আগের মত দূর্গন্ধ, হতে হয় না হয়রানীর শিকার, ঔষধ কিনতে হচ্ছে না বাইরে থেকে, প্রয়োজন মত ডাক্তার এবং তাদের সেবা মনের মত হওয়ায় খুশি অভিভাবকরা।
সব কিছুর ভেতরে ডা. আমিনুল ইসলাম রোগীদের নিজেস্ব চেম্বারে দাওয়াত দিয়ে বেড়াচ্ছেন। যা এনসিটিএফ এর নজর কারে। এই ব্যাপারে কৃর্তপক্ষকে জানানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানানো হয়।
এনসিটিএফ মাদারীপুরের মে মাসের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত।
ইমন হাসানঃ গত ১৭ মে এনসিটিএফ মাদারীপুরের মে মাসের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি মুন্নি সভাটি পরিচালনা করেন। মাসিক সভার কয়েকটি প্রধান আলোচিত বিষয় ছিলো শিশু ওয়ার্ড পরিদর্শন, শ্রমজীবী শিশুদের শিক্ষার ব্যাবস্থা, ইফটিজিং এর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার এর কাছে স্বারকলিপি প্রদান, শিশুগবেষকদের গল্প প্রেরন, বিদ্যালয়ে এনসিটিএফ এর পরিচিতি ও সদস্য সংগ্রহ ক্যাম্পেইন ইত্যদি। সকলের আলোচনায় ও মতামতের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহন করে এনসিটিএফ মাদারীপুর কার্যনির্বাহী কমিটি। জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম এবং সেন্ট্রাল ইয়ুথ ভলান্টিয়ার মমতাজুল ইসলাম রুমন সভায় উপস্থিত ছিলেন।