মহান শহিদ দিবসে গাইবান্ধা এনসিটিএফ এর আয়োজনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা
এনসিটিএফ গাইবান্ধা: ২১ ফেব্রুয়ারি, মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে গাইবান্ধায় শিশুদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে শিশু অধিকার বাস্তবায়নকারী শিশু সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) গাইবান্ধা জেলা কমিটির আয়োজনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি, (সোমবার) সকালে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার বোয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসব প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি গাইবান্ধা ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার মধ্যে ছিলো চিত্রাংকন, সুন্দর বাংলা হাতের লেখা ও সাধারণ জ্ঞান/কুইজ প্রতিযোগিতা। এসব প্রতিযোগিতায় উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮০ জন শিশু শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা শেষে শিশুদের নিয়ে শহিদ দিবস, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী সকল শিশুর মাঝে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
আলোচনা সভায় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সম্পা খাতুন বলেন, আমরা আগে জানতাম না গাইবান্ধা জেলার পূর্ব নাম কি জানতাম না। আজকের কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তা জানতে পারছি। পরে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিসেস শাহানাজ সুলতানা বলেন, এমন একটি আয়োজন তাদের বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। এই আয়োজনের মাধ্যমে শিশুদের মানসিক বিকাশ ঘটবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন, সাধারণ জ্ঞান ও কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তারা অনেক তথ্য জানতে পেরেছে যা তাদের সামনের দিনগুলোতে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য ও মেধার বিকাশে ভুমিকা রাখবে। পরবর্তী বছর গুলোতে তিনি নিজ উদ্যোগে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করবেন বলে জানান শিক্ষার্থীদের।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মো. ইসলাম, এনসিটিএফ এর সভাপতি মেহেদী হাসান অন্তর, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মুছা, কার্যনির্বাহী সদস্য আনাস আহমেদ, জেলা ভলান্টিয়ার মো. তাওহীদ তুষার প্রমুখ।
এনসিটিএফ চুয়াডাঙ্গা জেলায় শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশুদের সাথে বড়দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সাথে জেলার শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশু সংলাপ অনুষ্ঠান অদ্য ২০ শে নভেম্বর জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করে এনসিটিএফ চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটি। এনসিটিএফ জেলা সভাপতি আসিব মল্লিক নয়নের সভাপতিত্বে আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মনিরা পারভীন মহোদয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক, জেলা সমাজসেবা উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথ, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব আফসানা ফেরদৌসি, এনসিটিএফ এর সাবেক সদস্য তামান্না, জেলা ভলান্টিয়ার সাফফাত, বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ, সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড রাইটস প্রমোটার মমতাজুল রুমন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সাংবাদিক, চুয়াডাঙ্গা জেলা এনসিটিএফ ও স্কুল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য আরিকা এবং সাজের সঞ্চালনায় এনসিটিএফ এর মনিটরিং প্রতিবেদনের সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে জেলার শিশুদের প্রধান ৪টি ইস্যু যথা শিক্ষা, সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনোদন বিষয়ে ১২টি প্রধান উন্নয়নযোগ্য বিষয় এবং তার আলোকে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ অতিথিদের মাঝে সমাধান কল্পে তুলে ধরেন শিশুরা। বিশেষ অতিথি, শিক্ষক ও অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিগণ শিশুদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে নিজেদের স্থান থেকে সহযোগিতা এবং প্রশাসনকে সমাধান কল্পে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান। শিশুদের উত্থাপিত উল্লেখযোগ্য সমস্যা ও সুপারিশ গুলো ছিলো বিদ্যালয়গুলোর কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও তার জন্য শিক্ষক, উপকরণ এবং নিয়মিত ক্লাস আয়োজন নিশ্চিত করা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা ও আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জেলায় শিশু পার্ক গুলোতে ক্লাস পালিয়ে শিক্ষার্থীদের অপ্রয়োজনীয় সময় অতিবাহিত বন্ধে প্রশাসনের মনিটরিং বাড়ানো, শারীরিক শিক্ষা ক্লাস ও কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য বিষয়ে কাউন্সিলিং করা, বিদ্যালয়ের পরীক্ষা খাতার অবমূল্যায়ন রোধে অন্য স্কুলের শিক্ষক দ্বারা খাতা মূল্যায়ন করা, বিদ্যালয়ে শারীরিক শাস্তি বন্ধে মনিটরিং ও শিক্ষকদের কাউন্সিলিং বাড়ানো, শিক্ষক সংকট দূর করা, বিজ্ঞানাগার সুবিধা নিশ্চিত করা, সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে সাপ্তাহিক রুটিনে নির্দিষ্ট ক্লাস অন্তর্ভুক্ত করা, শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রধান অতিথি সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় তার বক্তব্যে শিশুদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শিশুদের উত্থাপিত সমস্যাগুলোর কিছু কাজ ইতোমধ্যে বাস্তবায়নাধীন তা উল্লেখ করেন এবং বিদ্যালয়গুলোর সার্বিক উন্নয়নযোগ্য বিষয়ে সমাধানে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। এছাড়াও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান সহ অন্যান্য উন্নয়নযোগ্য দিকগুলো সমাধানে প্রতুশ্রুতি ব্যাক্ত করেন। শিশুদের এমন আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন আগামীতেও পাশে থাকবে এবং শিশুবান্ধব জেলা গঠনে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন। আয়োজনের শেষ পর্বে জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব আফসানা ফেরদৌসি এনসিটিএফ ও জেলা প্রশাসনকে তার সমাপনী বক্তব্যে উত্থাপিত শিশুদের সমস্যাগুলো এবং অতিথিদের দেয়া প্রতুশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করার আকুল আবেদন জানান এবং শিশু সংলাপ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এনসিটিএফ এর শিশু সংলাপ আয়োজনের সহযোগিতায় ছিলেন জেলা প্রশাসন চুয়াডাঙ্গা জেলা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চুয়াডাঙ্গা এবং সেভ দ্য চিলড্রেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সাথে শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক এনসিটিএফ শিশু সংলাপ অনুষ্ঠিত
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সাথে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জেলার শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশু সংলাপ অনুষ্ঠান গত ৩১শে অক্টোবর কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করে এনসিটিএফ কুমিল্লা জেলা কমিটি। এনসিটিএফ জেলা সভাপতি শাহরিয়ার ইমরোজ সুদাদের সভাপতিত্বে আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সম্মানিত জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ আবুল ফজল মীর মহোদয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী, জেলা শিশু একাডেমি গ্রন্থারিক ইকবাল হোসেন এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড রাইটস প্রমোটার মমতাজুল রুমন এবং কুমিল্লা জেলা এনসিটিএফ ও স্কুল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ইসরাত জাহান রিয়ার সঞ্চালনায় এনসিটিএফ এর মনিটরিং প্রতিবেদনের সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে জেলার শিশুদের প্রধান ৪টি ইস্যু যথা শিক্ষা, সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনোদন বিষয়ে ১৩টি প্রধান উন্নয়নযোগ্য বিষয় এবং তার আলোকে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ অংশগ্রহনকারী শিশুরা অতিথিদের মাঝে সমাধান কল্পে তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথি শিশুদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে নিজেদের স্থান থেকে সহযোগিতা এবং প্রশাসন থেকে সমাধান কল্পে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জানান। শিশুদের উত্থাপিত উল্লেখযোগ্য সমস্যা ও সুপারিশ গুলো ছিলো বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাণিজ্যিক কোচিং এর বৈষম্য দূর করা, বিদ্যালয়গুলোর বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া, শিশুদের মাদক থেকে রক্ষা করতে চিহ্নিত স্থানগুলোতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা ও আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জেলায় শিশু পার্ক ও শিশুদের বিনোদনের স্থানগুলোকে শিশু বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা ,শিক্ষার্থীদের মানসিক হতাশা দূরকল্পে বিদ্যালয়ে বিশেষ ক্লাস আয়োজন, বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিশোর গ্যাং নির্মূলে ব্যবস্থা গ্রহন, শিশু বা কম বয়স্কদের দ্বারা অটোরিকশা ও সিএনজি চালোনা রোধ করা, ইভটিজিং বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া, প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানোয় ব্যবস্থা নেয়া সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রধান অতিথি সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয় তার বক্তব্যে শিশুদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শিশুদের উত্থাপিত সমস্যাগুলোর কিছু কাজ ইতোমধ্যে বাস্তবায়নাধীন তা উল্লেখ করেন এবং বাণিজ্যিক কোচিং বন্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নিবেন। এছাড়াও কিশোর গ্যাং ও রাজনৈতিক কাজে শিশুদের ব্যবহার বন্ধে অভিযান চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান। মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান সহ অন্যান্য উন্নয়নযোগ্য দিকগুলো সমাধানে প্রতুশ্রুতি ব্যাক্ত করেন। শিশুদের এমন আয়োজনে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন আগামীতেও পাশে থাকবে এবং শিশুবান্ধব জেলা গঠনে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিমি খুব শীঘ্রই জেলা প্রশাসন এর সম্পূর্ণ আর্থিক সহযোগিতায় আবারো শিশুদের এমন সুন্দর আয়োজন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শিশুদের সংলাপ আয়োজনের শেষ পর্বে কুমিল্লা জেলা এনসিটিএফ সহ-সভাপতি পুষ্পা চক্রবর্তী জেলা প্রশাসনকে তার সমাপনী বক্তব্যে উত্থাপিত এনসিটিএফ শিশুদের সমস্যাগুলো এবং অতিথিদের দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করার আকুল আবেদন জানিয়ে শিশু সংলাপ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এনসিটিএফ ঠাকুরগাঁও জেলায় শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশুদের সাথে বড়দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৩ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ঠাকুরগাঁও এবং সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহযোগিতায় এনসিটিএফ ঠাকুরগাঁও জেলার আয়োজনে শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশুদের সাথে বড়দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড: কেএম কামরুজ্জামান সেলিম। “শিশু করবে সোনার দেশ, পায় যদি সে পরিবেশ” এস্লোগানকে ধারণ করে এনসিটিএফ’র সভাপতি হাজেরা তানজিম’র সভাপতিত্বে এনসিটিএফ জেলা কমিটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা এবং বিনোদন এই ৪ টি বিষয়ের উপর মোট ১০ টি সমস্যার বিপরীতে মোট ২৫ টি সুপারিশ তুলে ধরে শিশুরা। প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এনসিটিএফ সদস্যদের বিভিন্ন মতামত ও সুপারিশ মালার প্রেক্ষিতে বক্তব্য দেন, জেলা প্রশাসক ডঃ কে এম কামরুজ্জামান সেলিম। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) আমিনুল ইসলাম, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম, জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার জহিরুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসের পরিদর্শক দৌলতুজ্জামান , এসআই ফিরোজা, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোহা: জবেদ আলী, সিআরপি মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত, শিশুবন্ধু প্ল্যাটফর্মের সদস্যবৃন্দ এবং সাংবাদিকবৃন্দ। তানভীর হাসানের সঞ্চালনায় এনসিটিএফ সদস্যদের মধ্যে স্বাগত বক্তব্য দেন, এনসিটিএফ এর সাধারণ সম্পাদক মাহিন সরকার। এসময় জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন এনসিটিএফ’র কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুরা নিজের মেধা বিকশিত করার সুযোগ পেয়েছে। সেইসাথে প্রতিটি ইউনিয়ন ও উপজেলায় এ কার্যক্রম চালানোর আহ্বান জানান। এবং সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। পরে এনসিটিএফ শিশুরা ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কর্তৃক তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চিত্র প্রদর্শনী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের চিত্র বিষয়ক স্থাপিত “অদম্য বাংলাদেশ কর্ণার” পরিদর্শন করেন।
মেহেরপুরে জেলা প্রশাসনের সাথে শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশু সংলাপ অনুষ্ঠিত
মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের সাথে জেলার শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক শিশু সংলাপ অনুষ্ঠান অদ্য ২৬ শে সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করে এনসিটিএফ মেহেরপুর জেলা কমিটি। এনসিটিএফ জেলা সভাপতি এস.এম. মেহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের সম্মানিত জেলা প্রশাসক জনাব আতাউল গণি মহোদয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব ইবাদত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব শেখ মুস্তাফিজুর রহমান, গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব এম. এ খালেক, মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস, পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক জনাব মশাররফ হোসেন, সেভ দ্য চিলড্রেনের শিশুদের জন্য কর্মসূচির ডেপুটি ম্যানেজার জনাব হাবিবুর রহমান, সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি ম্যানেজার জনাব আবু জাফর মুহাম্মদ হোসেন, জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজ সেবা সহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের প্রতিনিধি, জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর সভার প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সিসিজি প্রতিনিধি, সিবিও প্রতিনিধি, এসএমসি প্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং মেহেরপুর জেলার সকল ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা এনসিটিএফ এর কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এলিসা এবং রিয়াদের সঞ্চালনায় এনসিটিএফ এর মনিটরিং প্রতিবেদনের সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে জেলার শিশুদের প্রধান ৪টি ইস্যু যথা শিক্ষা, সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনোদন বিষয়ে ১২টি উন্নয়নযোগ্য বিষয় এবং তার আলোকে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ অতিথিদের মাঝে সমাধান কল্পে তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথি গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে শিশুদের বান্ধব জেলা গঠনে শিশু সংলাপ আয়োজনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসন ও সেভ দ্য চিলড্রেনকে সাধুবাদবান জানান এবং আগামীতে সেভ দ্য চিলড্রেনের শিশুদের জন্য কর্মসূচি না থাকলেও যাতে এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে সে আহবান জানান। শিশুদের উত্থাপিত উল্লেখযোগ্য সমস্যা ও সুপারিশ গুলো ছিলো বিদ্যালয়গুলোর কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞানার থাকলেও তার জন্য শিক্ষক, উপকরণ এবং নিয়মিত ক্লাস আয়োজন নিশ্চিত করা, বিদ্যালয়গুলোর বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা, কিছু কিছু স্কুলের স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা, হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা ও চিকিৎসক সংকট দূর করা, শিশুদের মাদক থেকে রক্ষা করতে চিহ্নিত স্থানগুলোতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা ও আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, মেহেরপুর জেলায় ও প্রতিটি উপজেলায় শিশু পার্ক নির্মান করা, বিদ্যালয়ে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চার শিক্ষক ও উপকরণ নিশ্চিত করা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়াও শিশুরা সেভ দ্য চিলড্রেনের মেহেরপুর জেলায় কাজ সমাপ্ত করার পরবর্তী সময়ে এনসিটিএফকে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য স্থানীয় সরকারের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার আশা প্রকাশ করে। প্রধান অতিথি সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয় তার বক্তব্যে শিশুদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি শিশুদের উত্থাপিত সমস্যাগুলোর কিছু কাজ ইতোমধ্যে বাস্তবায়নাধীন তা উল্লেখ করে বলেন শিক্ষক ও চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া শীঘ্রই সম্পন্ন হবে, ইতোমধ্যে ৭০০ এর অধিক বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান সহ অন্যান্য উন্নয়নযোগ্য দিকগুলো সমাধানে প্রতুশ্রুতি ব্যাক্ত করেন। শিশুদের এমন আয়োজনে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আগামীতেও পাশে থাকবে এবং শিশুবান্ধব জেলা গঠনে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন। আয়োজনের শেষ পর্বে সভাপতি তার সমাপনী বক্তব্যে উত্থাপিত শিশুদের সমস্যাগুলো এবং অতিথিদের দেয়া প্রতুশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করার আকুল আবেদন জানিয়ে শিশু সংলাপ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
এনসিটিএফ চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ), চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহযোগিতায় জেলা পর্যায়ে শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক দায়িত্ব বাহকদের সাথে শিশুদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা পর্যায়ে এনসিটিএফ এর স্কুল মনিটরিং, ও স্থানীয় প্রত্রিকার প্রতিবেদনের আলোকে উঠে আসা সমস্যা এবং সুপারিশেগুলো তুলে ধরে এনসিটিএফ সদস্যরা। এ সময় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও বিনোদন এই চারটি বিষয়ের উপর ০৮টি সমস্যার বিপরীতে ২৫টি সুপারিশ উপস্থাপন করে এনসিটিএফ। শিশুদের সমস্যাগুলো এবং সুপারিশগুলোর প্রেক্ষিতে সভার প্রধান অতিথি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ এ জেড এম নুরুল হক বলেন, আমি সত্যই অভিভূত আমাদের জেলার শিশুদের দেখে। ব্যতিক্রমিধর্মী এই সভায় অংশগ্রহণ করতে পেরে সত্যই ভাগ্যবান মনে করছি। তোমাদের ধন্যবাদ আমাকে আজকের এই সভায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। তোমাদের নিয়ে আসা প্রতিটি সমস্যার সাথে আমি একমত। প্রতিটি সমস্যার সমাধানে আমরা বর্তমানে কাজ করছি। বাকিগুলোও আমরা করবো। আমি ডিডিএলজিকে বলবো এনসিটিএফ জেলা কমিটিকে আমার সাথে আরেকটি সভার আয়োজন করতে। আমি ওদের সাথে আবার বসতে চাই। নিরাপত্তা কর্মী দ্বারা শিশুরা ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে এটা দুঃখজনক। আমি আজই পুলিশ সুপারকে বলবো এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবার জন্য। তোমাদের আজকের সমস্যাগুলো এবং সুপারিশমালা আমাকে দিয়ে যাবে। আমরা এগুলো নিয়ে বসবো। এছাড়া সভার বিশেষ অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, এনসিটিএফ জেলা ইউনিয়ন পরিষদগুলো শিশু উপযোগি কিনা দেখতে পারে। আমাদের জেলায় বাল্য বিবাহ বেড়েই চলেছে এটা নিয়েও তোমাদের কাজ করতে হবে। আমি কোন স্থানে ভিজিটে গেলে স্কুল পরিদর্শন করি। তোমাদের কথার সাথে একমত পোষণ করে আমি এখন থেকে স্কুল পরিদর্শনে অবশ্যই টয়লেটের দরজা এবং পর্যাপ্ত উপকরণ ব্যবস্থা আছে কিনা দেখবো। এছাড়া সভায় উপস্থিত ছিলেন এ. কে এম তাজকির-উজ-জামান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), মোহাম্মদ সাইফুল মালেক সহঃ জেলা শিক্ষা অফিসার, মোঃ সায়েদুল ইসলাম সহঃ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সিরাজুল মনির আফতাবী, সহকারী পরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, মোসাঃ শামশুন নাহার, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা সিভিল সার্জেন, মোঃ শফিকুল আলম জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, মুহম্মদ হাবিবুর রহমান সেলস্ ম্যানেজার এসএমসি, সেভ দ্য চিলড্রেন এর চাইল্ড রাইটস প্রমোটর মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত , মোহাঃ শাহ আলম সহ- সভাপতি শিশুবন্ধু প্লাটফর্ম, মোঃ মোসফিকুর রহমান সভাপতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্তমঞ্চ, মোঃ মেহেদি হাসান সাংবাদিক দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন, এবং এনসিটিএফ জেলা ভলান্টিয়ার মোঃ ওয়ালিদ হাসান ও নিবেদিতা ঘোষ পূজা। এনসিটিএফ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সভাপতি হুসান আবরাব আবির এর সভাপতিত্বে ও সাধারন সদস্য মোসাঃ আজিজা কাওসারের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনসিটিএফ এর সাধারণ সম্পাদক মোহাঃ মাসুম রেজা সিয়াম।
সর্বপরি সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা শিশুদের উপস্থাপিত সমস্যা গুলো তাদের সুপারিশের আলোকে সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন। জেলার এনসিটিএফ কমিটিসহ মোট ১৭ জন এনসিটিএফ সদস্য এই মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করে।