গাইবান্ধায় এনসিটিএফ এর জুন মাসের মাসিক সভা সম্পন্ন
ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ), গাইবান্ধা এর জুন মাসের মাসিক সভা সম্পন্ন হয়েছে। ১৩-০৬-১৭ তারিখ দুপুর ১২ টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, গাইবান্ধা কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এনসিটিএফ এর সভাপতি আশিকুর রহমান শাওনের এর সভাপতিত্বে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সহ উপস্থিত ছিলেন সেন্ট্রাল ইয়ুথ ভলান্টিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত, জেলা ভলান্টিয়ার মোঃ তাওহীদ তুষার, মারফিয়া সিলভী।
সভায় উপস্থিত সদস্যগণের মতামতের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১. “জেলার দায়িত্ব বাহক কর্মকর্তাগণের সাথে শিশুদের অধিকার বিষয়ক মত বিনিময় সভা ২০১৭” তারিখঃ আগামী ২৫ জুলাই, ২০১৭খ্রীঃ (সম্ভাব্য সময়)
স্থানঃ জেলা প্রশাসক এর সম্মেলন কক্ষ, গাইবান্ধা।
২. দোয়া ও ইফতার মাহফিল। (১৮-০৬-২০১৭ইং)
৩. ঈদে রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের সন্তানদের নিয়ে মেহেদী উৎসব। (২৫-০৬-২০১৭ইং)
স্থানঃ অরকা হোমস, গাইবান্ধা।
৪. ইয়ুথ ফোরাম, গাইবান্ধা ও এনসিটিএফ, গাইবান্ধা এর যৌথ উদ্যোগে হতদরিদ্র পরিবারের ৫০ জন শিশুর মাঝে ঈদের সেমাই-চিনি বিতরণ। (২৪-০৬-২০১৭ইং)
নড়াইল জেলায় এনসিটিএফ এর নিজ উদ্যোগে বিতর্ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
নড়াইল জেলা এনসিটিএফ এর আয়োজনে ১২ জুন ২০১৭ তারিখে নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দিনব্যাপী বিতর্ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উক্ত কর্মশালায় নড়াইল এনসিটিএফ এর জেলা কমিটির সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের স্কুল কমিটির সদস্য বৃন্দ অংশগ্রহণ করে। সর্ব মোট ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। কর্মশালা শেষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ পত্র বিতরণ করা হয়।
নিজের বিয়ে প্রতিরোধ করলো ভোলার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা
গোপাল চন্দ্র দে; শিশু সাংবাদিক ভোলা ॥
বাল্য বিয়ে থেকে নিজেকে রক্ষা করে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন ভোলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা আক্তার (১৩)। তিনি নিজেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তার বিয়ে ভেঙ্গে দেন । এ ঘটনায় পুরো শহর জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফারজানা বলেন, আমার স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হবো। কিন্তু বাবা-মা জোর বিয়ে ঠিক করে দেয়, কিন্তু বিয়ে নয়, পড়ালেখা করতে চাই। তাই স্বপ্ন পূরন করতেই বিয়ে বন্ধ করার উদ্যোগ নেই। মঙ্গলবার (২৩ মে) ও বুধবার (২৪ মে) এ ঘটনা ঘটে।
দুরন্ত সাহসি ফারজানা আক্তার বলেন, তিনি সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কানাইনগর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ সিরাজ পঞ্চায়েতের মেয়ে ও ভোলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। নিয়মিত লেখাপড়া চলছিলো তার। খেলাধুলায় মেতে উঠতো সহপাঠিদের সাথে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সে হাসি আনন্দ হারিয়ে গেল। ফারজানা জানায়, একদিন আমার মা জান্নাতুল ফেরদৌসের কাছ থেকে শুনতে পাই চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারী বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু কার সাথে বিয়ে হলো, বর কে আমি তার কিছুই জানতাম না।
এর প্রতিবাদ করতে চাইলে মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও খালা রোকেয়া বেগম বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখাতো। তাকে বিভিন্নভাবে স্কুলে আসতে বাধা সৃষ্টি করতো। যার ফলে বিদ্যালয়ে ফারজানা আক্তারের উপস্থিতি ছিলো কমে যায়।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে ফারজানার মা তাকে বলে, রাতে তোর জামাই আমাদের বাড়িতে আসবে। কথাটি শুনে ফারজানা আতঙ্কে উঠে। জামাই আসা উপলক্ষে বাজার সদাই করা হয়। কাউকে কিছু না বলে ফারজানা সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ওই দিন সকালে ভোলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসে বিষয়টি শিক্ষকদেরকে জানায়। সবকিছু শুনে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শরমিন জাহান শ্যামলী, এনসিটিএফ ডিস্টিক ভলান্টিয়ার এবং বাল্য বিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সহসভাপতি আদিল হোসেন তপুকে জানান। আদিল হোসেন তপু সংগঠনের অন্যান্য লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে যান। এই বিয়ে বন্ধ করার জন্য ফারজানা আক্তার জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি চিঠি লেখে। পরে এনসিটিএফ এবং বাল্য বিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সহায়তায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে ওই ছাত্রী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুব্রত কুমার সিকদারকে বিষয়টি জানান। তিনি এডিএম মোঃ আবদুল হালিমকে বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্ব দেন।
পরে এডিএমএর আদেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি ফোর্স সহ ওই ছাত্রীর বাড়ীতে যান। বাড়িতে গিয়ে ফারজানার পিতাকে না পেয়ে মা জান্নাতুল ফেরদৌসকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে এসে বাল্য বিয়ে সম্পর্কে তাকে বুঝানো হয় এবং ১৮ বছরের আগে বিয়ে পড়াবে না এই মর্মে মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বুধবার (২৪ মে) ফারজানার পিতা মোঃ সিরাজ পঞ্চায়াতকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। পরে জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন তাকে বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে অবহিত করেন। সিরাজ পঞ্চায়েত তার ভুল বুঝতে পারেন এবং ১৮ বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে দিবেন না বলে অঙ্গীকার করেন।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন ও স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক মাহামুদুর রহমান ওই ছাত্রীর লেখাপড়ার জন্য ফারজানার হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম উদ্দিন ইউনিসেফের সহায়তা ও কোস্ট্র ট্রাস্টের বাস্তবায়নে ইসিএম প্রকল্প থেকে ফারজানা আক্তারের লেখাপড়ার জন্য শিশু সুরক্ষা বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
জেলা প্রশাসকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ
০৪-০৬-১৭ ইং তারিখ নড়াইল জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ এমদাদুল হক স্যার কে ফুলের শুভেচ্ছা জানায় নড়াইল এনসিটিএফ। নড়াইল এনসিটিএফ নবাগত জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে পরিচিত হয় এবং এনসিটিএফ এর কার্যক্রম তুলে ধরে। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জনাব কাজী মাহাবুবুর রশীদ, জনাব মোঃ আবু সুফিয়ান (ম্যাজিস্টেট), জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব ওয়ালিউর রহমান, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং সিটি কলেজের প্রফেসর মহোদয়।
এনসিটিএফ কিশোরগঞ্জ জেলার জুন মাসের মাসিক মিটিং অনুষ্ঠিত
০৫-০৬-১৭ তারিখে কিশোরগঞ্জ জেলা এনসিটিএফ এর মাসিক মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকতা জনাব তায়েফা হাছিনা। উক্ত মিটিং এ জেলা প্রশাসকের এর সাথে মিটিং এর সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বার্ষিক পরিকল্পনা পুনরালোচনা ও আগামী ০৭-০৬-১৭ইং তারিখ এনসিটিএফ কিশোরগঞ্জের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল আয়োজনে করণীয় দিক গুলো নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
এনসিটিএফ নড়াইল জেলার জুন মাসের মাসিক মিটিং অনুষ্ঠিত
০৭-০৬-১৭ তারিখে নড়াইল জেলা এনসিটিএফ এর মাসিক মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মিটিং এর আলোচ্য বিষয় ছিল রমজান মাস কে কেন্দ্র করে নড়াইল এনসিটিএফ এর কার্যক্রম নিয়ে। ১৬ রমজান(১২ জুন) নড়াইল এনসিটিএফ এর স্বদ্যোগে জেলা কমিটির সদস্য ও স্কুল কমিটির সদস্যদের জন্য বিতর্ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবার ও নড়াইল এনসিটিএফ নড়াইলে ২২ রমজান (১৮ জুন) ইফতার মাহফিল এর আয়োজন করা হবে। এছাড়া ২৬ রমজান (২২ জুন) অসহায়, এতিম ও হতদরিদ্র শিশুদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করবে এনসিটিএফ নড়াইল। উক্ত মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সভাপতি রুদ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাজিবুল ইসলাম সহ কমিটির সকলে ও ডিভি মোঃ মোছাব্বির হোসেন মোরাদ।