কুড়িগ্রাম জেলা এনসিটিএফ এর মাসিক মিটিং অনুষ্ঠিত

০৮ এপ্রিল ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) কুড়িগ্রাম জেলা শাখার এপ্রিল মাসের মাসিক মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা কমিটির সভাপতি কে এম রেজওয়ানুল হক নুরনবীর সভাপতিত্বে স্কুল কমিটি নির্বাচন, জেলা শিশু অধিকার পরিস্থির উপর রিপোর্ট তৈরি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় জেলা কার্য-নির্বাহী কমিটি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সেন্ট্রাল ইয়ুথ ভলান্টিয়ার ওয়াসিমুল বিয়েল, জেলা ভলান্টিয়ার ফারজানা ইয়াসমিন ও মিঠুন দেব প্রমুখ।

কিশোরগঞ্জ জেলা এনসিটিএফ এর এপ্রিল মাসের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

০৮-০৪-১৭ ইং রোজ শনিবার অনুষ্ঠিত হল এনসিটিএফ কিশোরগঞ্জ এর এপ্রিল মাসের মাসিক সভা। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জ এনসিটিএফ এর সভাপতি। সভার মূল বিষয় ছিল দরিদ্র শিশুদের মাঝে বৈশাখি বস্ত্র বিতরণ।  ১৩-০৪-১৭ ইং রোজ বৃহস্পতিবার বস্ত্র বিতরণ করা হবে। উক্ত সভায় এনসিটিএফ কিশোরগঞ্জের কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্য বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রতনদের গল্প

সিরাজুল ইসলাম আসিফঃ শীতের সকাল মানে কুয়াশা ঢাকা সকাল। কিন্তু ব্যস্ত ঢাকার গমগমে পরিবেশে এই শীত যেন সকাল ৯টা বাজতে না বাজতেই মিলিয়ে যায়। ঢাকার আকাশ যেন ঢেকে গেছে বিশাল বিশাল অট্টালিকায়। এত শত অট্টালিকার ভিড়েও বহু বস্তি আছে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায়। সেই বস্তিতে বসবাসরত মানুষগুলোকে আকাশ দেখার জন্য ঘর থেকে বের হতে হয় না। তারা তাদের খুপরি ঘরের পলিটিনের চালের ফুটো দিয়েও দেখতে পারে সুবিশাল আকাশটাকে। ঢাকার সেই অগনিত বস্তির মধ্যে একটিতে থাকে রতন। বয়স আর কত হবে ৮/৯। রতনের মা মারা গেছে ক্যান্সারে। মা মারা যাওয়ায় বাবা আরেকটা বিয়ে করে ফ্লাট বাড়িতে চলে গেছে রতন এবং রতনের বোনটাকে রেখে। রতনের বোনের নাম মুন্নি। মুন্নির বয়স ৫ বছর। সকাল হলেই মুন্নি এবং রতন বেরিয়ে পরে কাজে। মুন্নি পার্কে ফুল বিক্রি  করে। আর রতন পার্কে ঘুরে ঘুরে সিগারেট, চা-কফি বিক্রি  করে। এই কাজ করে ওরা দিনে ২ বেলা চাল ফুটিয়ে খেতে পারতো।
তাই করে চলতো ওদের। রতন একটা স্কুলে ক্লাস ২ পর্যন্ত পরেছিলো। রতনের ইচ্ছা ছিলো সে অনেক বড় হবে। একজন সৎ পুলিশ অফিসার হবে। ওরা যখন কাজ করতে পার্কে পার্কে ঘুরে বেড়ায় তখন মাঝে মাঝে পুলিশের দৌড়ানি খেতে হয় ওদের। তাই ও বলে,’আমি যদি পুলিশ হইতে পারি তাইলে আমাগো মতো ছোড ছোড পুলাপাইন যারা রাস্তায় ঘুইরা ঘুইরা কাম করে ওগোরে মারুম না’।
এমনি একদিন রতন আর মুন্নি পেটের তাগিদে গিয়েছিলো পার্কে। সারাদিনের কাজ শেষ করে তাদের সেই বস্তির ঘরটি তে ফিরে দেখে ঘরটি আর নেই। স্থানীর প্রভাবশালী এক ব্যাক্তির লোকেরা সব বস্তি উচ্ছেদ করে দিয়ে গেছে। রতনদের সেই থাকার জায়গায় নাকি মার্কেট হবে। বিশাল মাল্টি কমপ্লেক্স ভবন হবে। রতনদের থাকার মতো এখন কোনো জায়গা নেই, ভাত রান্না এবং চা জ্বাল দেয়ার হাড়িটাও ভেঙ্গে দিয়ে গেছে ওরা।
রতন আর মুন্নি এখন থাকছে ফুটপাতে। তীব্র শীতের মধ্য রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা কুকুরগুলো পাশেই শুয়ে থাকতে হয় ওদের। ঢাকা শহরে খড় কুটা নেই, থাকলে ভালো হতো। অন্তত সেই খড়কুটার উপরও শুয়ে থাকতে পারতো। রতন মাঝে মাঝে ভাবে,’ এই শহরটা যেমন ইট পাথরে ভরে যাচ্ছে তেমনিভাবে এই শহরের মানুষগুলো হয়তো ইট পাথরে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।’ প্রতিদিন রাতেই টহল পুলিশের দৌড়ানি খেয়ে এক ফুটপাত ছেড়ে অন্য ফুটপাতে সরে যেতে হয়।
রতন এবং মুন্নির খাবার সংগ্রহের এখন একমাত্র জায়গা ডাস্টবিন গুলো।  ঢাকায় ডাস্টবিনগুলো থাকাতে ভালোই হলো, অন্তত এটাই একমাত্র জায়গা যেখানে টাকা ছাড়াই খাবার খাওয়া যায়।

আমার বন্ধু জুয়েল

আসিফা রশিদ (পিরোজপুর) : চাহিদা বঞ্চিত শিশু জুয়েল। জুয়েলের বয়স ১০ বছর। সে পিরোজপুর জেলার নামাজপুরে তার  পরিবারের সাথে বসবাস করে। জুয়েলরা দুই বোন এবং দুই ভাই। জুয়েল তার বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। তার বাবা দিনমজুরের কাজ করে আর মা গৃহিণী। তার দুই বোন পড়াশুনা করে। কিন্তু জুয়েলের বাবার সামান্য উপার্জনে বড় সংসার ভাল ভাবে চলে না। জুয়েল পড়াশুনা করতে চাই কিন্তু তার পরিবারের অভাবের কারণে সে পড়াশুনা করতে পারে না। তার বাবা মা সংসারের খরচ চালানোর জন্য তাকে ইট ভাঙার কাজ করতে বাধ্য করে। তার যে বয়সটা পড়াশুনা করার, সে সেই বয়সটায় ইট ভাঙার মত কষ্টকর কাজ করে। সে সারাদিন রাস্তার পাশে বসে ইট ভাঙে। এত অল্প বয়সে সারাদিন ঘাম ঝরা পরিশ্রম করে সে প্রতিদিন ২০০ টাকা পায়, তা দিয়ে সংসারের খরচ চালায়। জুয়েলের বয়স এখন মাএ ১০ বছর। তার এখন ইট ভাঙার মত কঠোর পরিশ্রম করার বয়স না। তারও অন্য শিশুদের মত অনেক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু, সে তার পরিবারের দারিদ্রতার কারনে তার চাহিদা পূরন করতে পারছে না।

মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলা এনসিটিএফ কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

গত ২২-০৩-২০১৭ থেকে ২৩-০৩-২০১৭ তারিখে মেহেরপুর সদর উপজেলায়, ২৭-০৩-২০১৭ থেকে ২৮-০৩-১৭ তারিখে এবং মুজিবনগর উপজেলায় ২৯-০৩-১৭ থেকে ৩০-০৩-১৭ তারিখ ইং তারিখ পর্যন্ত পৃথক পৃথক দুই দিন ব্যাপী শিশু অধিকার, শিশু সুরক্ষা নীতিমালা, শিশু অধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং, স্থানীয় সরকার বাজেট ও এনসিটিএফ অপারেশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি আয়োজনে এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়। এনসিটিএফ উপজেলা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভলেন্টিয়ারবৃন্দ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে। প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেনের ভলেন্টিয়ার মো: মিদুল ইসলাম মৃদুল। আরও উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেনের আবু জাফর মুহাম্মদ হোসেন, সৈয়দ নাসিদুল হক ও পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির ডিপিডি ইউনুস আলী, টেকনিক্যাল অফিসার সুরেস চন্দ্র রায় ও হুসনা বানু রানী। প্রশিক্ষণে শিশুদেরকে শিশু অধিকার রক্ষার্থে কাজ করা এবং জীবন পরিচালনার জন্য যথাযথ কৌশলসহ এনসিটিএফ এর কাজকে আরও বেগবান করার জন্য দিক নির্দেশনামুলক ধারনা প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণলব্দ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এনসিটিএফ সদস্যবৃন্দ তাদের কাজ সমূহ আরও সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করতে পারবে, যা মেহেরপুর জেলার শিশু অধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সহায়ক হবে। উল্লেখ্য যে, মেহেরপুর জেলার সকল পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়নে ধারাবাহিকভাবে এই প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত হবে।

বিদ্যালয় পরিদর্শন

গত ১৮ই মার্চ ২০১৭ এনসিটিএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেয়েদের একটি প্রতিনিধি দল বালিকা বিদ্যালয় গুলোতে স্যানিটেশন  ব্যাবস্থা পর্যবেক্ষণ করার লক্ষে নগরীর অন্যতম দুটি বালিকা বিদ্যালয় গভ মডেল গার্লস হাই স্কুল ও সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন এ যায়।  স্কুলগুলো সারেজমিন ঘুরে এবং বিভিন্ন শ্রেণীর মেয়েদের সাথে কথা বলার পর বেরিয়ে আসে নানা সমস্যা।  প্রধান যে সমস্যাটি মেয়েদের হয় তা হচ্ছে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন এর অভাব। স্কুলে ৫ ঘন্টা ক্লাস করলেও তারা বেশিরভাগ সময় ল্যাট্রিন গুলোতে যেতে সংকোচ বোধ করে,  ফলে কিডনিতে অনেকেরই দেখা দেয় নানা রোগ।  তাছাড়া ছাত্রীদের জন্য সুরক্ষিত বিশ্রামকক্ষের ব্যাবস্থা না থাকায় প্রায় তারা সংকোচ এর কারণে স্কুল বন্ধ করছে।  ছাত্রীরা তাদের জন্য বিশ্রামকক্ষের দাবি জানায়।  পরে স্কুল কতৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা জানায় ছাত্রীরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি যত্নবান নয়,  স্কুলের ল্যাট্রিন গুলো নিয়মিত ভাবে পরিষ্কার করা হয়।  তারা শীঘ্রই বিশ্রাম কক্ষ হিসেবে আলাদা একটি কক্ষ বরাদ্দ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত আসার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন এবং এনসিটিএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিমকে তাদের এ পরামর্শের প্রশংসা করে। তারা আরো জানায় এনসিটিএফ যেনো মেয়েদের স্যানিটেশন সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি ক্যাম্পেইন চালু করে। টিম এনসিটিএফ শীঘ্রই ক্যাম্পেইন চালু করার আশাবাদ ব্যাক্ত করে।