এনসিটিএফ চট্টগ্রামের সহায়তায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ আনন্দ ছড়িয়ে দিলো সার্জ ফাউন্ডেশন

পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষ্যে সবাই যখন নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে নতুন জামায় সাজাতে ব্যস্ত ঠিক তখনই কিছু সমাজ সচেতন তরুণ এগিয়ে আসলো নগরীর সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে ঈদের রঙে রাঙিয়ে দিতে। এনসিটিএফ চট্টগ্রামের সহায়তায়  স্বেচ্চাসেবী সামাজিক সংগঠন সার্জ ফাউন্ডেশন ২৩ ফেব্রুয়ারী রোজ শুক্রবার নগরীর কল্পলোক আবাসিকের সুবিধাবঞ্চিত শ্রমজীবি শিশুদের নিয়ে ইমপেরিয়াল স্মাইল ইভেন্টের আয়োজন করে। এতে তারা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে ঈদ বস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি মেহেদী রঙে রাঙিয়ে দেয় প্রতিটি শিশুর হাত। সার্জ ফাউন্ডেশনের সিইও এবং এনসিটিএফ চট্টগ্রামের সভাপতি  শাহরিয়ার তামিম সৌরভ তাদের এই আয়োজন সম্পর্কে বলেন, “প্রতিবারের ন্যায় এইবার ও আমরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ আনন্দ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি। তাদেরকে আমরা ব্রান্ডের জামা উপহার দিয়েছি যেই জামাগুলো সাধারণত আমরা আমাদের ভাই-বোনদের জন্য কিনে থাকি। আমাদেরকে যারা আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে আয়োজনটি সাফল্যমন্ডিত করতে সহায়তা করেছেন আমি তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” চাইল্ড পার্লামেন্টের প্যানেল ডেপুটি স্পীকার  জান্নাতুল ফেরদৌস মমি অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “এমন একটি আয়োজনের অংশ হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখে নির্মল হাসি ফুঁটাতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।” এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্ল্যাক লোটাস এর সিইও জাহিদ আলম। তার মতে, “সার্জ ফাউন্ডেশন যেভাবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করছে তা সত্যিই অসাধারণ। এইভাবে সমাজের সামর্থ্যবান তরুণেরা এগিয়ে আসলে হয়ত সমাজের কেউই ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেনা।” ঈদ জামা পেয়ে কল্পলোক আবাসিকের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাসিতে যেন একটি স্বর্গীয় পরিবেশ তৈরি হয়। প্রতিটি শিশু মেহেদী রাঙা হাতে যেন ঈদ আনন্দে মেতে উঠে। এসময় অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে সংগঠনের ভলান্টিয়ার তাসফি তাসনিম বলেন,” তাদের হাতে মেহদী লাগিয়ে দেয়ার সময় তাদের আনন্দ দেখে মুগ্ধ হয়েছি। তাদের মুখের নির্মল হাসিটাই এই ঈদে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি”। উল্লেখ্য, সার্জ ফাউন্ডেশনের এই আয়োজনে পার্টনার ছিলো অহনিশ ফিল্মস, ব্ল্যাক লোটাস ইভেন্টস।

দুঃস্থ ও অসহায় শিশুদের মধ্যে ঈদ বস্ত্র বিতরণ

ঈদের আনন্দ সবার কাছে পৌছে দেবার জন্য ২২-০৬-১৭ ইং ২৬ রমজানে ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) নড়াইল, নড়াইল জেলার দুঃস্থ ও অসহায় শিশুদের মধ্যে  ঈদ বস্ত্র বিতরণ করে। সর্ব মোট ৩১ জন দুঃস্থ ও অসহায় শিশুদের মধ্যে ঈদ বস্ত্র প্রদান করা হয়। ঈদ বস্ত্র প্রদানের জন্য যে সব শিশুদের নামের তালিকা তৈরী করা হয় তারা নড়াইল শিশু একাডেমি হতে ১:৩০ মিনিটে তাদের নির্ধারিত বস্ত্র গ্রহণ করে। আর যে সকল তালিকা ভুক্ত শিশু অনুপস্থিত ছিল তাদের প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে তাদের নির্ধারিত পোশাক তাদের কাছে পৌঁছে দেয় নড়াইল এনসিটিএফ। সকল শিশুর মুখে ঈদ আনন্দ দেখাই নড়াইল এনসিটিএফ এর উদ্দেশ্য।

সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ

২১-০৬-২০১৭ তারিখে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ও ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্স চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার উদ্দ্যোগে গরিব, পথশিশু, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ করা হয়। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার অডিটোরিয়ামে চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক জনাব জিয়াউদ্দীন আহমেদ প্রধান অতিথী থেকে ঈদ বস্ত্র বিতরণ করেন। প্রধান অতিথী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সের উদ্দোগটি মহান। শিশুরাই শিশুদের জন্য কাজ করছে। অবশ্যই এই এনসিটিএফ’র শিশু অনান্য শিশুদের থেকে আলাদা। এসময় জেলা প্রশাসক জনাব জিয়াউদ্দীন আহমেদ এনসিটিএফ’র শিশু অধিকার বিষয়ে কাজের পাশে থাকার কথা বলেন। তিনি শিশু একাডেমি এবং সরকারি ভাবে পরিচালিত জাতীয় এই শিশু সংগঠনটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। শিশুদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণের এই মহৎ উদ্দ্যোগকে সাধুবাদ জানান। জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা ফেরদৌসির সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সের সহ-সভাপতি মাহফুজা লুবনা শোভা, শিশু গবেষক আসাদ, সদস্য নাঈমা, শিশু একাডেমির লাইব্রেরিয়ান আবু বকর সিদ্দিক। সম্পুর্ণ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দৈনিক সময়ের সমীকরণ’র শিশু সাহিত্য বিষয়ক সাপ্তাহিক পাতা ”স্বপ্নচারী’র” সম্পাদক, এনসিটিএফ’র শিশু সাংবাদিক ও শিশু অধিকারকর্মী সাংবাদিক মেহেরাব্বিন সানভী।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বেহাল দশা

শিশুদের সেবা গ্রহণে নানা সমস‌্যা এবং শিশু ওয়ার্ডের বেহাল দশায় এক প্রকার খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে ঠাকুরগাঁও আধুনিক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডটি। গত ১৯ জুন এনসিটিএফ ঠাকুরগাঁও কার্যনির্বাহী কমিটি শিশু ওয়ার্ডটি পরিদর্শন করতে গেলে নানা সমস‌্যা দেখতে পায়। ওয়ার্ডটিতে বেড স্বল্পতার কারণে বেশির ভাগ শিশুদের তিল পরিমাণ জায়গা না থাকলেও ঠাসাঠাসি করে মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। বেশির ভাগ ঔষুধ বাইরে থেকেই ক্রয় করতে হচ্ছে শিশুদের, এমটায় জানা গেল চিকিৎসা সেবা নিতে আসা শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে। শুধু ঔষুধ নয় নানা ধরনের পরীক্ষা করতে বাইরের ক্লিনিকে বাড়তি টাকা গুনতে এখানে আসা শিশু রোগীর অভিভাবকদের। অভিযোগ পাওয়া গেছে প‌্যাথালজিতে দক্ষ জনবল না থাকায় বাইরে যেতে হচ্ছে তাদের। শিশু ওয়ার্ডের মধ‌্যে বাড়তি মানুষের উপস্থিতির কারণে শিশুরা আরো অসুস্থ‌্ হয়ে পড়ছে। তবুও এগুলো দেখার কেউ নেই। ওয়ার্ডে কর্তব‌্যরত সেবিকা থাকলেও এগুলোতে তেমন কোন মাথা ব‌্যথা নেই তাদের। জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে গেলে তিনি উপস্থিত না থাকায় জেলার আধুনিক এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বেহাল দশা নিয়ে কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। হাসপাতাল পরিদর্শনকালে এনসিটিএফ জেলা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস‌্যবৃন্দ, জেলা ভলান্টিয়ার এবং সেন্ট্রাল ইয়ুথ ভলান্টিয়ার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত উপস্থিত ছিলেন।

দুঃস্থ শিশুদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ

ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে আজ ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) নেত্রকোনা জেলা কমিটি ১৫০ জন দুঃস্থ শিশুদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ করে। ডিসি স্যারের সম্মেলন কক্ষে এই ঈদ বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক জনাব ড. মো: মুশফিকুর রহমান স্যার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি কমান্ডিং অফিসার জনাব লে. কর্ণেল সাঈদ হোসেন স্যার, পুলিশ সুপার জনাব জয়দেব চৌধুরী স্যার এবং নেত্রকোনারর পৌর মেয়র জনাব আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম খান। এ সময় এনসিটিএফ সভাপতি সাজনীন আক্তার শ্রাবণী অতিথিদের মাঝে এনসিটিএফ এর যাবতীয় কার্যক্রম তুলে ধরেন।

পথশিশুদের সাথে এনসিটিএফ নড়াইল এর ইফতার ও দোয়া মাহাফিল অনুষ্ঠিত

১৮ জুন ২০১৭ ইং নড়াইল এনসিটিএফ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। উক্ত  মাহফিলের আয়োজন করা হয়  জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় – নড়াইলে (শিশু একাডেমিতে)। মাহফিলে বিভিন্ন স্কুলের স্কুল কমিটির সদস্যরা অংশ গ্রহণ করে। এছাড়া ও কয়েক জন শিশু ইফতার মাহফিলে যোগদান করে। মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলার সাবেক ডিস্ট্রিক ভলেন্টিয়ার লাকি, নড়াইল  সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা  নাহিদা আহম্মেদ, নড়াইল  জেলার সাবেক শিক্ষা অফিসার জনাব ইউসুফ আলী ও নড়াইল জেলার শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব ওয়ালিউর রহমান স্যার। এছাড়া নড়াইল জেলা  এনসিটিএফ কমিটির  সভাপতি রুদ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাজিবুল ইসলাম সহ সকল সদস্য ও ডিভি মোসাঃ সানজিদা ইয়াসমিন পুতুল ও মোঃ মোছাব্বির হোসেন মোরাদ উপস্থিত ছিলেন।

পথশিশুদের সাথে এনসিটিএফ খুলনার ইফতার ও দোয়া মাহাফিল

১৫-০৬-২০১৭ইং তারিখ অনুষ্ঠিত হল, খুলনা এনসিটিএফ এর উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে ইফতার ও দোয়া মাহফিল। সভায় উপস্থিত ছিলেন ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান (অধ্যাপক ও প্রধান ফার্মেসী বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)।  তিনি আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন এবং বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি আমাদের সকল কাজে সহযোগীতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়াও মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন খুলনার শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব আবুল আলম এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের ইয়ুথ ভলান্টিয়ার মিদুল ইসলাম মৃদুল। মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন এনসিটিএফ খুলনার সভাপতি লিটন হাওলাদার। এছাড়াও উপস্থিত ছিল কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাধারণ সদস্য এবং উপদেষ্টা।

সর্বোপরি দোয়া এবং সকলের মঙ্গলের কামনার মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত করা হয়।

গাইবান্ধায় এনসিটিএফ এর জুন মাসের মাসিক সভা সম্পন্ন

ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ), গাইবান্ধা এর জুন মাসের মাসিক সভা সম্পন্ন হয়েছে। ১৩-০৬-১৭ তারিখ দুপুর ১২ টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, গাইবান্ধা কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এনসিটিএফ এর সভাপতি আশিকুর রহমান শাওনের এর সভাপতিত্বে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সহ উপস্থিত ছিলেন সেন্ট্রাল ইয়ুথ ভলান্টিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত, জেলা ভলান্টিয়ার মোঃ তাওহীদ তুষার, মারফিয়া সিলভী।

সভায় উপস্থিত সদস্যগণের মতামতের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১. “জেলার দায়িত্ব বাহক কর্মকর্তাগণের সাথে শিশুদের অধিকার বিষয়ক মত বিনিময় সভা ২০১৭” তারিখঃ আগামী ২৫ জুলাই, ২০১৭খ্রীঃ (সম্ভাব্য সময়) 
স্থানঃ জেলা প্রশাসক এর সম্মেলন কক্ষ, গাইবান্ধা।

২. দোয়া ও ইফতার মাহফিল। (১৮-০৬-২০১৭ইং)

৩. ঈদে রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের সন্তানদের নিয়ে মেহেদী উৎসব। (২৫-০৬-২০১৭ইং)
স্থানঃ অরকা হোমস, গাইবান্ধা।

৪. ইয়ুথ ফোরাম, গাইবান্ধা ও এনসিটিএফ, গাইবান্ধা এর যৌথ উদ্যোগে হতদরিদ্র পরিবারের ৫০ জন শিশুর মাঝে ঈদের সেমাই-চিনি বিতরণ। (২৪-০৬-২০১৭ইং)

নড়াইল জেলায় এনসিটিএফ এর নিজ উদ্যোগে বিতর্ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

নড়াইল জেলা এনসিটিএফ এর আয়োজনে ১২ জুন ২০১৭ তারিখে নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দিনব্যাপী বিতর্ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উক্ত কর্মশালায় নড়াইল এনসিটিএফ এর জেলা কমিটির সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের স্কুল কমিটির সদস্য বৃন্দ অংশগ্রহণ করে। সর্ব মোট ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। কর্মশালা শেষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ পত্র বিতরণ করা হয়।

নিজের বিয়ে প্র‌তি‌রোধ কর‌লো ভোলার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা

গোপাল চন্দ্র দে; শিশু সাংবাদিক ভোলা ॥

বাল্য বিয়ে থেকে নিজেকে রক্ষা করে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন ভোলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা আক্তার (১৩)। তিনি নিজেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তার বিয়ে ভেঙ্গে দেন । এ ঘটনায় পুরো শহর জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফারজানা বলেন, আমার স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হবো। কিন্তু বাবা-মা জোর বিয়ে ঠিক করে দেয়, কিন্তু বিয়ে নয়, পড়ালেখা করতে চাই। তাই স্বপ্ন পূরন করতেই বিয়ে বন্ধ করার উদ্যোগ নেই। মঙ্গলবার (২৩ মে) ও বুধবার (২৪ মে) এ ঘটনা ঘটে।

দুরন্ত সাহসি ফারজানা আক্তার বলেন, তিনি সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কানাইনগর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ সিরাজ পঞ্চায়েতের মেয়ে ও ভোলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। নিয়মিত লেখাপড়া চলছিলো তার। খেলাধুলায় মেতে উঠতো সহপাঠিদের সাথে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সে হাসি আনন্দ হারিয়ে গেল। ফারজানা জানায়, একদিন আমার মা জান্নাতুল ফেরদৌসের কাছ থেকে শুনতে পাই চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারী বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু কার সাথে বিয়ে হলো, বর কে আমি তার কিছুই জানতাম না। 

এর প্রতিবাদ করতে চাইলে মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও খালা রোকেয়া বেগম বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখাতো। তাকে বিভিন্নভাবে স্কুলে আসতে বাধা সৃষ্টি করতো। যার ফলে বিদ্যালয়ে ফারজানা আক্তারের উপস্থিতি ছিলো কমে যায়।

এ অবস্থায়  মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে ফারজানার মা তাকে বলে, রাতে তোর জামাই আমাদের বাড়িতে আসবে। কথাটি শুনে ফারজানা আতঙ্কে উঠে। জামাই আসা উপলক্ষে বাজার সদাই করা হয়। কাউকে কিছু না বলে ফারজানা সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ওই দিন সকালে ভোলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসে বিষয়টি শিক্ষকদেরকে জানায়। সবকিছু শুনে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শরমিন জাহান শ্যামলী, এনসিটিএফ ডিস্টিক ভলান্টিয়ার এবং বাল্য বিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সহসভাপতি আদিল হোসেন তপুকে জানান। আদিল হোসেন তপু সংগঠনের অন্যান্য লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে যান। এই বিয়ে বন্ধ করার জন্য ফারজানা আক্তার জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি চিঠি লেখে। পরে এনসিটিএফ এবং বাল্য বিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সহায়তায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে ওই ছাত্রী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুব্রত কুমার সিকদারকে বিষয়টি জানান। তিনি এডিএম মোঃ আবদুল হালিমকে বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্ব দেন।

পরে এডিএমএর আদেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি ফোর্স সহ ওই ছাত্রীর বাড়ীতে যান। বাড়িতে গিয়ে ফারজানার পিতাকে না পেয়ে মা জান্নাতুল ফেরদৌসকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে এসে বাল্য বিয়ে সম্পর্কে তাকে বুঝানো হয় এবং ১৮ বছরের আগে বিয়ে পড়াবে না এই মর্মে মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বুধবার (২৪ মে) ফারজানার পিতা মোঃ সিরাজ পঞ্চায়াতকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। পরে জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন তাকে বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে অবহিত করেন। সিরাজ পঞ্চায়েত তার ভুল বুঝতে পারেন এবং ১৮ বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে দিবেন না বলে অঙ্গীকার করেন।

এসময় জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন ও স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক মাহামুদুর রহমান ওই ছাত্রীর লেখাপড়ার জন্য ফারজানার হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম উদ্দিন ইউনিসেফের সহায়তা ও কোস্ট্র ট্রাস্টের বাস্তবায়নে ইসিএম প্রকল্প থেকে ফারজানা আক্তারের লেখাপড়ার জন্য শিশু সুরক্ষা বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।