৮ মার্চ, বুধবার, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড পরির্দশন এবং জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মশিউর রহমান ও সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শেখ মোঃ এহসানুল ইসলাম এর সাথে শিশু চিকিৎসা বিষয়ে সাক্ষাৎকার করে ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) শরীয়তপুর। পরির্দশনের সময় এনসিটিএফ-শরীয়তপুরের সদস্যদের চোখে পরে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, দরজাবিহীন শৌচাগার এবং অভিভাবকদের অন্যতম আভিযোগ “পর্যাপ্ত ঔষধ সরবারহ করা হয় না “। শিশু ওয়ার্ডের পাশেই অবস্থিত শৌচাগার, যার অবস্থা খুবই শোচনীয়। দুর্গন্ধযুক্ত এবং অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার শিশুদের জন্য খুবই অসাস্থ্যকর এবং এর ফলে শিশুদের সুস্থ হওয়ার চেয়ে পুনরায় সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন অভিভাবকেরা।
অধিকাংশ অভিভাবকদের অন্যতম অভিযোগ, ‘ডাক্তারদের দেখা পেতে গুনতে হয় বহু অপেক্ষার প্রহর। সকাল ১০টায় ওয়ার্ডে অবস্থিত রোগীদের দেখে যাওয়ার কথা থাকলেও ঠিক কখন যে তাদের ঘড়ির কাটায় ১০টা বাজবে তা বলা দুষ্কর।’
অভিভাবদের এই প্রশ্নের জবাবে ডাঃ শেখ মোঃ এহসানুল ইসলাম এনসিটিএফ-শরীয়তপুরকে জানান, ‘আমাদের এখানে ২জন শিশু বিষয়ক কন্সাল্টেন্ট থাকার কথা থাকলেও আছে ১ জন এবং সবসময় ১ জনের পক্ষে এত সময় মেনে চলাটা কষ্টের। এছাড়াও এখনে প্রয়োজনের তুলনায় কম ঔষধ সরবারহ হয় এবং সকল বিভাগের ডাক্তার নেই।’
টিকা দান কেন্দ্র পরির্দশন কালে দেখা যায় ঠিক ভিন্ন চিত্র। একটি কক্ষের একপাশে একটি মোটরবাইক পার্কিং করা, মেঝেতে অসংরক্ষিত অবস্থায় ছড়িয়ে আছে ব্যাবহারযোগ্য মুল্যবান সেলাইনগুলো, এবং সেই কক্ষের এককোনায় লেখা আছে ‘টিকা দান কেন্দ্র’। এই বিষয়ে টিকা কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তার কাছে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, “প্রতিটি হাসপাতালের ন্যায় এই হাসপাতালের একটি নির্দিষ্ট টিকা দান কেন্দ্র থাকলেও তা ব্যাবহার করা হচ্ছে অন্য কাজে এবং এই স্থানটিকে দেওয়া হয়েছে টিকা কেন্দ্র হিসেবে। এই কক্ষটি সত্যিকার অর্থেই শিশুকে টিকা দেবার জন্য যথাযথ উপযুক্ত নয়। প্রয়োজন আরও পরিষ্কার ও উন্নতমানের স্থান যা উক্ত রুমে নেই।”
পরিদর্শন শেষে ডাঃ শেখ মোঃ এহসানুল ইসলাম-তার বক্তব্যে বলেন, এই হাসপাতালে জনবলের অভাব, আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রের অভাব এবং জনগণের অসচেতনতার পরও আমরা রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার যথেষ্ট চেষ্টা করি। যদি উক্ত সমস্যাগুলো সমাধান করা হয় তাহলে আমরা আরও ভাল চিকিৎসা প্রদান করতে সক্ষম হব। এছাড়া তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি জনবল বৃদ্ধি এবং উন্নতকরণের বিষয়টি দ্রুত আমলে নেয় তাহলেই রোগীদের সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করা সক্ষম হবে।’
গত পরিদর্শনের পর এনসিটিএফ-শরীয়তপুর যে সকল সমস্যা সনাক্ত করে ছিলো উক্ত বছর পরিদর্শনকালে দেখা যায় ৭০ভাগ সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। উক্ত উন্নতিকরনের প্রধান উদ্যোক্তা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মশিউর রহমান কে এনসিটিএফ-শরীয়তপুর এর পক্ষ থেকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানায় এনসিটিএফ -শরীয়তপুরের সদস্যরা।
ডাঃ মোঃ মশিউর রহমান তার সাক্ষাৎকারে এনসিটিএফ শরীয়তপুরকে জানান, ‘নিজ উদ্যোগে সকল ডাক্তারদের অর্থায়নে সদর হাসপাতালে ১৬টি সিসি টিভি ক্যামেরা লাগাই, যাতে রোগীদের কোনো প্রকার সমস্যায় পড়তে না হয়। রোগীদের সর্বোত্তম সেবা দানের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ত্রুটি রাখতে চাই না। রোগীর খুশির জন্য চাকরীর শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে যাবো।’