২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশের জনপ্রিয় চাইল্ড পার্লামেন্টের ১২ তম অধিবেশন। অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া।
চাইল্ড পার্লামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের শিশু অধিকার সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্ক ফোর্স (এনসিটিএফ) এর এডভোকেসি শাখা হিসেবে বাংলাদেশে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের বাস্ত-বায়নে কাজ করে যাচ্ছে ।এ বছর বাল্য বিবাহ শিশু শিক্ষা ও সুরক্ষার অন্তরায় প্রতিপাদ্য বিষয়ে বাংলাদেশ এর ৬৪ জেলার চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য এবং ১৬ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ।
যেখানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য সহ ১৬ টি বিশেষ অঞ্চলের নির্বাচিত প্রতিনিধি মোট ৮৪ জন চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য এই অধিবেশনে অংশগ্রহন করেন। এবারের চাইল্ড পার্লামেন্ট এর প্রতিপাদ্য বিষয় “বাল্য-বিবাহ শিশুর শিক্ষা এবং সুরক্ষার অন্তরায়”।জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয়ে অধিবেশন শুরু করেন চাইল্ড পার্লামেন্ট স্পিকার লোমাত সহিবা। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ায় নিহত স্কুল শীক্ষার্থীদের স্বরনে শোক প্রকাশ করে চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্যরা এক মিনিট নিরবতা পালন করে ।জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া মেয়েদের বিয়ের নুন্ম্যতম বয়স ১৮ বৎসর থাকবে বলেই চাইল্ড পার্লামেন্টকে অবহিত করেন ।“ আইন মন্ত্রনালয় বাল্যবিবাহ রোধে মুল ভুমিকা পালন করতে পারে । মারেজ রেজিস্টার মনিটরিং এর জন্য যে সকল পদ খালি আছে সে গুলো পূরণ করে বিবাহ নিবন্ধন ব্যাবস্থাকে জোরালো করার অনুরোধ জানাচ্ছি, ” তিনি আইন মন্ত্রনালয়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ।সরকারি বেসরকারি গণ মাধ্যম গুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন– প্রন্তিক মানুষের কাছে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপুর্ন ভ’মিকা পালন করতে পারে ।তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহবান জানিয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বলেন – নরসিংদী চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য জীবন নেসা যাতে বাল্য বিবাহের হাত থেকে রক্ষা পায় এবং তার স্কুলে আসা যাওয়া অব্যাহত থাকে সে জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করবো।
চাইল্ড পার্লামেন্ট জাতীয় পর্যায়ে শিশুদের নেতৃত্ব দানকারি সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্ক ফোর্স (এনসিটিএফ) এর এডভোকেসি শাখা হিসেবে ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের আলোকে জেলা পর্যায়ে শিশু অংশ গ্রহনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে ।
অধিবেশনের স্বাগত বক্তব্যে চাইল্ড পার্লামেন্ট অর্জন উল্লেখ করে স্পিকার লোমাত সহিবা বলেন –
“২০০৩ সাল থেকে চাইল্ড পার্লামেন্ট এর অনেক অর্জন রয়েছে । মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামুল্যে বই প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তি বন্ধে প্রজ্ঞাপন জারি, বিদ্যালয়ে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা চালু করন, রাজনৈতিক কার্যক্রমে শিশুদের নিষিদ্ধকরনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি, শেনী কক্ষে মোবাইল ফোন ব্যাবহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা, পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি উল্লেখযোগ্য ।”
নরসিংদী চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য জীবন নেসা বাল্য বিবাহ নিয়ে নিজের জীবনে অভিজ্ঞতা তুলে ধরে –
“আমি নিজেই বাল্য বিবাহের শিকার । আমি সবার সহযোগিতায় বিয়ে ঠেকাতে পারলেও আংটি পড়ানো ঠেকাতে পারিনাই । আমার বান্ধবী আসমা মৃত সন্তান প্রসব করে । সে এখন সাভার গার্মেন্টস এ কাজ করছে ।”
বরগুনা চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য আসিফ হোসেন বলেন-
“অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ের কারনে অনেক মেধাবী মেয়ে তাদের পড়ালেখা থেকে ঝড়ে পড়ছে । ৬৬ ভাগ মেয়ের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে । পাশাপাশি বিয়ের আগে পড়ালেখা চালিয়ে যাবার কথা বললে ও বিয়ের পর অধিকাংশ মেয়েই পারে না ।”
কক্সবাজার চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য সুইটি রানী দে বলেন –
“আমার বান্ধবী ফোনে কথা বলে । আমি যখন নাইনে পড়ি থখন আমার বাবা মা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিতে চায় । কিন্তু আমি আমার বান্ধবীর বিয়ে ঠেকাতে পাড়ি নাই ।”
আমার বান্ধবী আসমা মৃত সন্তান প্রসব করে । সে এখন সাভার গার্মেন্ট এ কাজ করছে ।”
বরগুনা চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য আসিফ হোসেন বলেন-
“অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ের কারনে অনেক মেধাবী মেয়ে তাদের পড়ালেখা থেকে ঝড়ে পড়ছে । ৬৬ ভাগ মেয়ের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে । পাশাপাশি বিয়ের আগে পড়ালেখা চালিয়ে যাবার কথা বললে ও বিয়ের পর অধিকাংশ মেয়েই পারে না ।”
কক্সবাজার চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য সুইটি রানী দে বলেন –
“আমার বান্ধবী ফোনে কথা বলে । আমি যখন নাইনে পড়ি থখন আমার বাবা মা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিতে চায় । কিন্তু আমি আমার বান্ধবীর বিয়ে ঠেকাতে পাড়ি নাই ।”
চাইল্ড পার্লামেন্ট সম্পর্কে:
ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্স এর এডভোকেসি উইং চাইল্ড পার্লামেন্ট এর নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ১২৮। প্রত্যেক জেলায় ১ জন মেয়ে এক জন ছেলে শিশুদের ভোটে নির্বাচিত হয় । দেশের সবচে বড় শিশু সংগঠন এনসিটিএফ এর নিবন্ধিত সদস্য সংখ্যা ৪০ ,০০০ এর বেশি ।
বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেন , প্ল্যান এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন এর কারিগরি সহযোগিতায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সাচিবিক সহযোগিতায় এনসিটিএফ জেলা পর্যায়ে শিশু অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছে ।
জেলা উপজেলা পর্যায়ে এনসিটিএফ সদস্যরা স্থানীয় পর্যায়ে শিশু অধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন ও প্রশাসনের সাথে সমন্বয় প্রতিবেদন করে থাকে । বাংলাদেশের ১২ থেকে ১৮ বছরের যে কোন শিশু নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে পারে । জেলা পর্যায়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে এনসিটিএফ সচিবালয়ে যোগাযোগ করা যাবে ।